রামু প্রতিনিধি::
নির্বাচনী পরীক্ষায় ৪টি বিষয়ে কৃতকার্য হওয়া এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। কিন্তু ৮ বিষয়ে কৃতকার্য হতে পারেনি, এমন শিক্ষার্থীকে দেয়া হয়ে ফরম পূরণের সুযোগ। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে এভাবে চলছে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার প্রাচীন বিদ্যাপীঠ রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে।
রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশন ফরম পূরণ এবং ফলাফল নিয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারির এ ধরনের নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি নিয়ে অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
এ নিয়ে রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফাহমিদা মুস্তফার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগী অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
লিখিত অভিযোগ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে- দশম শ্রেণির ১৪৭ জন ছাত্রছাত্রী নির্বাচনী পরীক্ষা ২০২২ এ অংশ নেন। এরমধ্যে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী কৃতকার্য হতে পারেনি।
নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে শাহরিয়াদ মো. সায়েফ, মো. রাশেদ খান, ফাহিম সরওয়ার, রাশেদুল ইসলাম ও লিমন শর্মা জানান, শারীরিক অসুস্থতা, অভিভাবকের মৃত্যু, পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে তাদের অনেকে নির্বাচনী পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে পারেনি। কিন্তু সুযোগ দেয়া হলে তারা চ‚ড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর আহমদকে বিষয়টি জানানোর পর তিনি বিষয়টি আমলে নিচ্ছেননা। উল্টো ৮ বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকেও নিয়ম বহিভর্‚তভাবে টাকা নিয়ে ফরম পূরণের অনুমতি দিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা আরো জানান- অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অনেকের রেজিস্ট্রেশনে ভুলক্রটি ছিলো। এসব ভুল সংশোধনের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে টাকা নেয়া হয়েছে। কিন্তু রেজিষ্ট্রেশনের ভুল এখনো সংশোধন করা হয়নি।
সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর আহমদ ও অফিস সহকারি অনু বড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চরম হয়রানি করছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে এসব অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফাহমিদা মুস্তফা জানিয়েছেন- ফরম পূরণে ৮টি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া সত্বেও একজন ছাত্রকে অনৈতিকভাবে সুযোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় এ ছাত্রের ফরম বাতিল করার জন্য বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরো জানান- বিদ্যালয়ে অনেক অনিয়ম ও অগোছালো বিষয় পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর আহমদ জানান- সকল শিক্ষকদের সাথে আলাপ করে পাশ করার উপযোগি শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি অনৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের সুযোগ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল জানিয়েছেন- বিদ্যালয়ের ৩০ জনের অধিক ছাত্র তাঁর কাছে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলেন। এতগুলো শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া দুঃখজনক। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকরা এর দায় এড়াতে পারেনা।
পাঠকের মতামত